কাগজ রিপোর্ট।। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকেই নানা অভিযোগে একের পর এক মামলার আসামি হন তিনি। তবে এবার নেদারল্যান্ডেসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক আদালতে তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এই অভিযোগে শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার মন্ত্রিপরিষদ এবং সহযোগীদেরও অভিযুক্ত করা হয়েছে।
লন্ডনভিত্তিক থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্সের ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন গত ২৮ অক্টোবর এ অভিযোগ দায়ের করেন বলে জানা গেছে।
অভিযোগে শেখ হাসিনা ও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে স্বাধীন তদন্ত এবং মূল সন্দেহভাজনদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির অনুরোধ করেছেন এ আইনজীবী।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যে অবস্থিত লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন মামলার বাদী ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন।
সে সময় ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন বলেন, গত ২৮ অক্টোবর আমি এই অভিযোগ দায়ের করেছি। মালায় শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভার সদস্য ও জড়িত বিভিন্ন সংস্থার ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল। তাদেরকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আবু সাঈদকে কীভাবে পুলিশ গুলি করেছে সেটি সারাবিশ্ব দেখেছে। আমরা এসব মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়গুলো তুলে ধরছি।
ওই সময় বাংলাদেশের সরকার আন্দোলন দমনে পুলিশ, র্যাব ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগকে মাঠে নামায়। তারা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, লাইভ বুলেট ব্যবহার করে। এতে প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় ২২ হাজার মানুষ আহত হয় বলে জানা গেছে। গণহত্যার পাশাপাশি গুলিতে অন্তত ৯২ জন দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন এবং শতশত মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
তিনি আরও জানান, এ অবস্থায় রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভা ও সংশ্লিষ্টদের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের স্বাধীন তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, যার সঙ্গে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ, বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং ভিডিও প্রমাণ যুক্ত করা হয়েছে ।
এই অভিযোগের অগ্রগতি নিয়মিত জানানো হবে উল্লেখ করে বলা হয়, এই অভিযোগের মাধ্যমে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভা এবং সরকারের অন্যান্য প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। আবেদনে উল্লিখিত বিভিন্ন অপরাধের মধ্যে রয়েছে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, গোপন বন্দিশালায় (আয়নাঘর) আটকে রেখে নির্যাতন, চলাচল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং গণহত্যার মতো গুরুতর অপরাধ।