কাগজ প্রতিবেদক।। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামীলীগকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, গণহত্যাকারীদের জনগণের ময়দানে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। কেননা রাজনীতি করতে হবে দেশের মানুষের আকাঙ্খাকে ধারণ করে, বাইরের কারও সাহায্য নিয়ে নয়। রাজনৈতিক দলসহ সকল পর্যায়ের স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ তৈরি করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সাথে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে। কেননা বছরের পর বছর দেরি করলে আগাছা জন্ম নিতে পারে, বিশৃংখলা সৃষ্টি হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল ফারুক সোসাইটিতে খুলনা মহানগর ও জেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে রুকন সম্মেলনে বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মো. মোবারক হোসাইন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ।শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে স্বীকার করেন না এমন লোকদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের আমীর বলেন, শিক্ষা সংস্কার কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমী নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭জন চৌকস সেনা সদস্য হত্যাসহ দেশের সকল হত্যাকান্ড এবং এর মাষ্টার মাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তা’ না হলে আবারো জালিমদের আগমন হতে পারে, তৃতীয় শক্তির উদ্ভব হতে পারে।রুকন সম্মেলনে জামায়াতের আমীর ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, বিগত পনের বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোন নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে গেছে। যার ফলেই জুলাই ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।আওয়ামীলীগের শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে আমীরে জামায়াত বলেন, বিডিআর হত্যার মধ্যদিয়ে ফ্যাসিবাদি শাসনের প্রথম ধাপ শুরু হয়। এরপর জামায়াতের ওপর স্টিম রোলার চালানো হয়। পর্যায়ক্রমে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে অথবা কারাগারে রেখে হত্যার মধ্যদিয়ে শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। যারা সারাজীবন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়।কিন্তু ইতোমধ্যেই জামায়াতের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা গ্রেফতার হতে শুরু করেছে। বর্তমান সরকার ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে একটি বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা করবে বলেও তিনি আশা করেন।জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হোসাইন হেলালের পরিচালনায় সুধী সমাবেশে বক্তৃতা করেন, জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,টিম সদস্য অধ্যক্ষ মশিউর রহমান খান ও মাস্টার শফিকুল আলম এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগর সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন প্রমুখ।