ডেস্ক রিপোর্ট।। ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার সরকারি ঋণ রেখে দেশ থেকে পালিয়েছেন সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশী ও বিদেশী উৎস থেকে এ ঋণ নেয়া হয়েছে। অথচ ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন সরকারের ঋণ স্থিতি ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। সে হিসাবে আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলেই সরকারের ঋণ স্থিতি ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বেড়েছে, যা সরকারের মোট ঋণের প্রায় ৮৫ শতাংশ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্যে গত দেড় দশকে সরকারের অস্বাভাবিক ঋণ বৃদ্ধির এ চিত্র উঠে এসেছে।ঘোষিত বাজেটে সরকারের পরিচালন ব্যয় মেটানো ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলে দেশী-বিদেশী উৎস থেকে এ ঋণ নেয়া হয়েছে। যদিও শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির বেশুমার অভিযোগ রয়েছে। এ সময়ে অবাধ লুণ্ঠনের শিকার হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। জনগণের লুণ্ঠিত এসব অর্থ পাচার হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির (জিএফআই) তথ্য বিশ্লেষণে পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, শেখ হাসিনার দেড় দশকের শাসনামলে দেশ থেকে অন্তত ১৪ হাজার ৯২০ কোটি বা ১৪৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় পাচারকৃত অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় অন্তত ১৭ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা (বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী প্রতি ডলারে ১১৮ টাকা ধরে)। যদিও বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যবহারযোগ্য নিট রিজার্ভ রয়েছে মাত্র ১৬ বিলিয়ন ডলারেরও কম।নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ের পর শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি। ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্তও দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা। চলতি বছরের মার্চে এসে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। আর ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ থেকে পালানোর সময় দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অন্তত ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।