ওয়াহিদ মুরাদ, বিশেষ প্রতিবেদক।।দেশব্যাপী নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে। লাগামহীন নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি ফিরছে না কিছুতেই। শহর লাগুয়া হাট-বাজারের চেয়ে গ্রমের হাট-বাজারে সিন্ডিকেটে নিত্যপণ্যের দাম আরো চড়া।এ অবস্থায় সাশ্রয়ী দামে সাধারণ মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের উদ্দেশে ১৫ নভেম্বর শুক্রবার থেকে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে ‘সকলের তরে সকলেই আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে’ এ নামেই একটা ন্যায্য মূল্যের সবজি বাজার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।সরেজমিনে পরিদর্শনে জানা যায়, বাজার সিন্ডিকেট ভাঙ্গার প্রত্যয়ে এবং সাধারণ মানুষকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে ন্যায্য মূল্যে সবজি সরবরাহের লক্ষ্যে খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর নিবাসী শেখ আজগর আলীর পুত্র মাহিদুল ইসলাম (মাহি পলাশ) এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তিনি সেখানে সুন্দর ডেকোরেশনের মাধ্যমে একটি সবজির দোকান পরিচালনা করছেন। দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নের বারাকপুর সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ মোড়ে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১ টা পর্যন্ত এবং বিকেল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ দোকান চালু হয়েছে। নানা রকমের সবজির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকাবাসী।সরেজমিনে দেখা যায়, সাশ্রয়ী এ দোকানে লাল শাক ১ কেজি ৩০ টাকা, আলু ১ কেজি ৭৩ টাকা, বরবটি ১ কেজি ৪০ টাকা, খিরাই ১ কেজি ৭০ টাকা, পালংশাক ১ কেজি ৫০ টাকা বেগুন ১ কেজি ৫৭ টাকা, মূলার কেজি ৩২ টাকা ফুলকপি কেজি ৬০ টাকা, বাঁধাকপি কেজি ৪৮ টাকা ও ধুনা পাতার কেজি ১২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। প্রতিদিনের সবজি পাইকারি ক্রয়ের সাথে সংগতি রেখে এ দোকানের সবজির দাম নির্ধারণ করা হয়।দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুরে শুরু হওয়া এ দোকানে বাজার করতে আসা ক্রেতা শ্যামলী সেন, আমিনুল ইসলাম, ও রীতা বিশ্বাসের সাথে কথা হয়। তারা এ প্রতিবেদককে জানান, “বাজারের উর্ধ্বগতির সাথে দাম বাড়ানোর যে পাল্লা তাতে এই উদ্যোগ কিছুটা হলেও আমাদের স্বস্তি প্রদান করছে। এখানে যে কোনো সবজি বাজার থেকে কম মূল্যে পাওয়া যায়। প্রতিটা সবজি বাজারে প্রাপ্ত সবজি থেকে টাটকা। মূল্যও কম। এই দামের পার্থক্য কমাতে এই উদ্যোগ সফল হবে বলে আমরা আশা করি।”বারাকপুরের সাংবাদিকসহ বিশিষ্টজনেরা বলেন, আশপাশের বাজারগুলোর সবজির বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙ্গতে কম মূল্যের দোকানের উদ্যোগদাতার আকাঙ্খা সফল হবে। ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার বিজয়ের পর সৈরাচারী সরকার পালালেও তাদের দোসররা এখনও এই দেশে রয়ে গেছে। এখনও যারা এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করে অধিক মুনাফার ষড়যন্ত্র করছে তারা সৈরাচারী হাসিনা সরকারের দোসর। এ কারণেই হাটে-বাজারে অস্থিরতা দেখা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফেরাতে এবং বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে লড়তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এ উদ্যোগ।সাশ্রয়ী এ দোকান মালিক মাহিদুল ইসলাম মাহি পলাশ বলেন, আমরা এই মুহুর্তে দিঘলিয়ার বারাকপুর মোড়ে একটি দোকানের মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে পথেরবাজারের আশেপাশে ও গাজীরহাট ইউনিয়নের গাজীরহাট বাজারের আশপাশে দোকান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করব। আমরা দিঘলিয়া উপজেলার সর্বত্রই এ উদ্যোগ খুব দ্রুতই ছড়িয়ে দেবো। এর ফলে বিভিন্ন বাজারে যেসব সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে তা ভেঙে দেওয়া হবে।এ সময় তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, সকলের তরে সকলে আমরা সকলে আমরা পরের তরে এ উদ্যোগের সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছেন অর্গানাইজার হিসেবে ড. সুলতানা আজিম। তিনি পেশায় একজন চিকিৎসক এবং একজন আন্তর্জাতিক সাংবাদিকও বটে। তিনি পৃথিবীর ১৫৮ টি দেশে পথ শিশু ও অসহায় মানুষের জীবনমান নিয়ে কাজ করেন।